অসহায়দের ইফতার পৌঁছে দিচ্ছেন ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া,অসহায় দুস্থ মানুষজন। পবিত্র মাসে খেটে খাওয়া অসহায় মানুষদের জন্য ইফতারের আয়োজন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস।
নিজ ধর্ম সনাতন হলেও দেশের খেটে খাওয়া অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন ছাত্রলীগের এই নেতা। নিজ উপজেলা গৌরীপুরের (ময়মনসিংহ) দিনমজুর হতদরিদ্র মানুষের মাঝে এই ইফতার বিতরণ করেছেন বলে জানান তিনি।
নিজস্ব কার্যক্রমের প্রথম দিন, তৃতীয় রমজানে, রান্না করে তৈরি ইফতার প্রায় ১৫০ লোকের মধ্যে বিতরণ করেন তিনি। ইফতার বিতরণ করতে গিয়ে কিছুটা ঘাটতি পড়েছে বলে মনে করে পরবর্তী দিনগুলোতে প্রায় ২৫০ অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে এই কার্যক্রম চালাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন এবং চাহিদা অনুযায়ী প্যাকেট বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে এই ছাত্রলীগ নেতার। এ লক্ষ্যে সকলের সাহায্যও কামনা করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে পোস্ট করেন এই ছাত্রলীগ নেতা। পোস্টে তিনি লিখেন, কাল (২৭ এপ্রিল) থেকে প্রতিদিন গৌরীপুর উপজেলার ১৫০ জন করে অসহায় লোকজনকে ইফতার করানোর দায়িত্ব নিবো ভাবছি! সবজি খিচুরি,আর খেঁজুর!’
এই কাজে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে তার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি লিখেন, কেউ কনট্রিবিউট করলে আমি জানিয়ে দিবো যে কার সৌজন্যে খাওয়ানো হচ্ছে! কেউ যদি ১/২ দিন এর দায়িত্ব নিতে চান ইনবক্সে জানাতে পারেন। তাহলে আমার জন্য সহজ হয়! গরীবের গরীবানা লবণ দিয়া পিঠা বানা, এই আরকি!
উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, গতকালই আমি এ বিষয়ে চিন্তা করে উদ্যোগটি নেই। এখন বাজার, সদায় করছি। সহযোগিতা হিসেবে অনেকেই সাধ্য মতো সাহায্য করছে। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ-ছয় দিনের ইফতারের খরচের টাকা উঠে গিয়েছে। দিনে প্রায় দেড়শো’ মানুষের জন্য ইফতার তৈরি করা হবে। সেটা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী খিচুড়ি আর খেজুর দিয়ে শুরু করছি। এতে দিনে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মতো খরচ হয়।
রান্না ও বিতরণ কার্যক্রমের বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, আজকেই আমরা প্রথম এই ইফতার বিতরণ কার্যক্রম শুরু করছি। আমাদের গৌরীপুরের বড় মসজিদ প্রাঙ্গণে রান্না হচ্ছে। আমরা আসরের পর রান্না করা খাবার নিয়ে বিতরণের উদ্দেশ্যে বের হবো। ভ্যান দিয়ে ঘুরে ঘুরে এই ইফতার বিতরণ করা হবে। যাতে ছিন্নমূল, রিকশাচালক, ভ্যান চালক কিংবা কোনো ছোট ফলের দোকানি মানুষরা অর্থাৎ যারা অসহায় তারাই যের এই ইফতার পায় এটাই আমাদের লক্ষ্য এবং এইভাবে বিতরণের ফলে কোনো গণজমায়েতও সৃষ্টি হবে না।
উদ্যোগের কারণ জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত বলেন, বাজারে খাদ্য দ্রব্যের স্বল্পতা, বাজারে তেমন কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না, ইফতার সামগ্রীও কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই যারা ছোট খাটো ব্যবসা করে, কোনো খোলা ফলের ছোট দোকানি কিংবা রিকশা, ভ্যান চালায় তারা খুবই কষ্ট থাকে। তাই এই সংকটের সময়ে আমরা সারাদিন পরে তাদের মুখে যাতে একটু হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারি তার লক্ষ্যেই আমরা এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।
এই কার্যক্রম পুরো রমজান মাসব্যাপী চলমান থাকবে বলেও জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস।
প্রথমদিনের ইফতার বিতরণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, গৌরীপুরের খেটে খাওয়া মানুষদের মাঝে বিতরণের উদ্দেশে ১৫০ প্যাকেট ইফতারের আয়োজন করা হয়েছিল তবে বিতরণের শেষ পর্যায়ে আমরা লক্ষ্য করেছি আরও কিছু প্যাকেট খাবার থাকলে যেই কয়েকজন লোক খাবার পায়নি তাদের দেয়া যেত, ঘাটতি পড়তো না।
ঘাটতি পড়েছে মনে হওয়ায় আজ ৪র্থ রোজা থেকে ২৫০ প্যাকেট ইফতার বিতরণ করার লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। এই কার্যক্রম শেষ রোজা পর্যন্ত চলবে এবং চাহিদা অনুযায়ী প্যাকেট বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে সনজিত চন্দ্র দাস নিশ্চিত করেছেন।