ত্রাণ আত্মসাৎ: আরও ৭ ইউপি চেয়ারম্যান, ৩ সদস্য বরখাস্ত
করোনা পরিস্থিতিতে ত্রাণ নিয়ে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। ত্রাণ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগে এবার আরও সাতজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও তিনজন ইউপি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ নিয়ে মোট ৩৫ জন জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হলো। তাদের মধ্যে ১৫ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ১৯ জন ইউপি সদস্য এবং একজন জেলা পরিষদ সদস্য।
নতুন করে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ইউপি চেয়ারম্যানরা হলেন- বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউপি’র মো. নূরে আলম বেপারী, ভোলা জেলার সদর উপজেলার রাজাপুর ইউপি’র মো. মিজানুর রহমান খান, পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার কমলাপুর ইউপির মো. মনির রহমান মৃধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউপি’র শাহ আল শফি আনসারী, রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার যশাই ইউপি’র মো. সিদ্দিকুর রহমান মন্ডল, নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউপি’র জারজিদ মোল্লা এবং কালিয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন চৌধুরী।
আর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ইউপি সদস্যরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউপি’র ৮নম্বর ওয়ার্ডের মো. রফিকুল ইসলাম, পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার গলাচিপা ইউপি’র ২ নম্বর ওয়ার্ডের মহিউদ্দিন সোহেল এবং একই উপজেলার কেশবপুর ইউপি’র সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. লিপি বেগম।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সঙ্কটের সময় তাদের বিরুদ্ধে সরকারি ত্রাণের চাল আত্মসাৎ, জাটকা নিধনে বিরত থাকা জেলেদের জন্য সরকারের বরাদ্দ করা ভিজিএফ চাল আত্মসাৎ ও কালোবাজারে বিক্রি, সরকারি ত্রাণের চাল ভুয়া মাস্টাররোলে বিতরণ দেখিয়ে আত্মসাৎ, সরকারি ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, সরকারের বরাদ্দ করা চাল নির্ধারিত পরিমাণে না দেওয়া ও বিধিবহির্ভুতভাবে অন্যদের মধ্যে বিতরণ ইত্যাদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
এদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আল শফি আনসারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় এলাকায় অবস্থান না করে বিনা অনুমতিতে বিদেশ গমণ করেছেন এবং নেত্রকোনা জেলার গাঁওকান্দিয়া ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ষাড়ের লড়াই আয়োজনের মাধ্যমে গণজমায়েত করে জন-জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন। তাদের কয়েকজন এরইমধ্যে গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে আছেন।
এসব ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম জনস্বার্থের পরিপন্থি বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের স্বীয় পদ হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
একইসময় পৃথক পৃথক কারণ দর্শানো নোটিশে কেন চূড়ান্তভাবে তাদের পদ থেকে অপসারণ করা হবে না পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এরই মধ্যে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়।
সূত্রঃ বাংলানিউজ২৪