Saturday, November 23, 2024
আন্তর্জাতিক

ব্যক্তিগত সুরক্ষা সংকটেও বাড়ি বাড়ি চিকিৎসা দিচ্ছেন মার্কিন ডাক্তাররা

নিউইয়র্কের ডাক্তারদের পাশে এসে স্বেচ্ছায় দাঁড়াচ্ছেন অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীরাও। মানব সভ্যতার এ সংকটে সেবা নিয়ে এগিয়ে আসা এই চিকিৎসকদের মধ্যে অনেক বাঙালি ডাক্তারও রয়েছেন। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম পিপিই-মাস্ক সংকটে ভুগছেন ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব মানবসেবা থেকে বিরত রাখতে পারেনি তাদের। শুধু হাসপাতালেই নয়, ভিড় কমাতে আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন এখানকার ডাক্তার-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

তাদেরই একজন নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, গত চার সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা কাজ করছি। নিজের চাকরির পাশাপাশি ঘরে ঘরে গিয়ে রোগি দেখছি। যদি ৫০ জনকেও সেবা দিয়ে হাসপাতালে যাওয়া থেকে বিরত করে সুস্থ রাখতে পারি, তাহলে হাসপাতালের ওপর চাপ পড়বে না। এতে অনেক ইতিবাচক ফল দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পিপিইর ব্যাপক সংকট। এখানে আমাকে একটা পিপিই দেওয়া হয়েছে একদিনের জন্য। আমি পাঁচদিন পর গিয়ে আরেকটা পিপিই চেয়েছি। যখন বললাম পিপিই থেকে মরা মানুষের গন্ধ আসছে, তখন আমাকে আরেকটা দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে কাজ করছি। উপায় না দেখে নিজের পিপিই নিজেই বানিয়েছি।

নিউইয়র্ক মৃত্যুপুরী হলেও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শহর ও অঙ্গরাজ্য থেকে প্লেন ভর্তি হয়ে চিকিৎসকরা এখানে নিজ খরচে সেবা দিতে আসছেন বলে জানান ডা. ফেরদৌস।

তিনি বলেন, ওই চিকিৎসকরা এখানে না এলেও পারতেন। তারা ঘুমাতে পারতেন অন্যদের মতো। কিন্তু তারা আসছেন নিজের খরচে। তারা আমাদের পেছনে দাঁড়িয়েছেন। এমন সংকটকালে মানবিকতাকে যদি নিজের স্কিলের সঙ্গে যোগ করতে না পারা যায়, তাহলে জীবনের শেষান্তে দেখা যাবে কিছুই নেই।

নিউইয়র্কে চিকিৎসা পেশায় জড়িত আরেক বাংলাদেশি ডা. ফারাহ সাঈদা হাসিন বলেন, কেউ বসে নেই। ডাক্তার-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী সবাই মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে সর্বোচ্চ কাজ করছেন।

তিনি বলেন, মানুষকে সেবা করার জন্য স্বপ্ন নিয়ে তিলে তিলে একজন চিকিৎসক হয়েছি। মানবতার এই মহাসংকটে মানুষকে সেবা দেওয়ার এখনই সময়। যারা এই সংকটে মানুষকে সেবাদান থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন, তারা আর যাইহোক মানুষকে সেবা দিতে চিকিৎসক-নার্স হননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *